La lecture à portée de main
Vous pourrez modifier la taille du texte de cet ouvrage
Découvre YouScribe en t'inscrivant gratuitement
Je m'inscrisDécouvre YouScribe en t'inscrivant gratuitement
Je m'inscrisVous pourrez modifier la taille du texte de cet ouvrage
Description
Informations
Publié par | e-bookPartnership |
Date de parution | 26 mars 2015 |
Nombre de lectures | 0 |
EAN13 | 9781783016297 |
Langue | English |
Informations légales : prix de location à la page 0,0150€. Cette information est donnée uniquement à titre indicatif conformément à la législation en vigueur.
Extrait
পুরনো রাস্তা নতুন পারাপার
শেলী রহমান
The hardback version of this book is published by Anyaprokash, Dhaka, ISBN 9789845022088 The English translation, Old Road New Crossings , by Anna Rahman is in a paperback, published by completelynovel.com ISBN 978 184 914 475 9. The English e-book is published by e-bookpartnerships ISBN 978-1783-01629-7
কৃতজ্ঞতা স্বীকার
এ কাহিনি লেখার সময় আমার স্ত্রী, এ্যানা রহমানের নিরন্তন উৎসাহ, সম্পূর্ণ কাহিনিটি ইংরেজিতে অনুবাদ করা ও ঊপন্যাসটির ঊপর সমালোচনামূলক মন্তব্য করার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আরও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি ডঃ বেগম জাহানারা, প্রাক্তন অধ্যাপিকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাহিত্যিককে সম্পাদনার কাজ করে সাহায্য করা এবং লেখার বিষয়ে সার্বক্ষণিক সাহস ও পরামর্শ দেওয়ার জন্য। বয়ঃসন্ধিকালের কিশোর-কিশোরীদের লেখক গেএ হিচেলমাসকেও আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা ইংরেজি সংস্করণে তার গুরুত্বপূণর্ণ উপদেশের ও সমালোচনামূলক মন্তব্যের জন্য।
দীপা চৌধুরি, মাহমুদা হোসেন, ড: ফজলে হোসেন, খাদেম আলী, নিলুফার করিম, লিও ও ইভা রহমান, ডেইল সকনেস, জ্যানেট স্ট্রিকল্যান্ড, ফেলিসিটি পিকক, ফেবিয়া চ্যাঙ, তোফায়েল ও রানা হায়দার, তিসা মুহাদ্দেস, এহসানুল হক, মোহাম্মদ মোহাদ্দেস, মো: মোখলেসুর রহমান প্রমুখ ব্যক্তিবর্গকে লেখা চলাকালীন সময়ে আমাকে অনুপ্রেরণা, সাহস ও শক্তি সরবরাহ করে চাঙ্গা রাখার জন্য আমার অজশ্র ধন্যবাদ।
অন্যপ্রকাশের আব্দুল্লাহ নাসের, মোমিন রহমান এবং বিশেষ ভাবে মাজহারুল ইসলাম-এর কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
উৎসর্গ:
আমার স্ত্রী এ্যানা রহমানকে যার ভালোবাসা, ব্যক্তিত্ব ও অনুপ্রেরণা আমাকে গত পঁয়তাল্লিশ বছর ধরে প্রভাবিত করেছে, যার সান্নিধ্য আমাকে নতুন ছাঁচে গড়েছে।
গ্রন্থস্বত্ব লেখকের
হার্ডকপির মোড়ক উন্মোচন : ৩০ শে অক্টোবর ২০১৪
প্রথম প্রকাশ : একুশের বইমেলা ২০১৫
লেখক এবং অন্যপ্রকাশ-এর লিখিত অনুমতি ব্যতিরেকে এই বইয়ের কোনো অংশেরই কোনোরূপ পুনরুৎপাদন বা প্রতিলিপি করা যাবে না। কোনো যান্ত্রিক উপায়ের (গ্রাফিক্স, ইলেকট্রনিক বা অন্য কোনো মাধ্যম, যেমন ফটোকপি, টেপ বা পুনরুদ্ধারের সুযোগ সংবলিত তথ্য সঞ্চয় করে রাখার কোনো পদ্ধতি) মাধ্যমে প্রতিলিপি করা যাবে না। বা কোনো ডিস্ক, টেপ, পারফোরেট মিডিয়া বা কোনো তথ্য সংরক্ষণের যান্ত্রিক পদ্ধতিতে পুনরুৎপাদন করা যাবে না। এই শর্ত লঙ্ঘিত হলে উপযুক্ত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।
হার্ডকপির প্রকাশক : মাজহারুল ইসলাম, অন্যপ্রকাশ৩৮/২-ক বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০ফোন : +৮৮০ ৭১২ ৫৮০২
e-mail : anyaprokash38@gmail.com web : www.e-anyaprokash.com
প্রচ্ছদ : ধ্রুব এষ
ইলেক্ট্রনিক বা ডিজিটাল পদ্ধতিতে বইটি প্রকাশ করায় কিছু কিছু শব্দের যুক্ত অক্ষরগুলি সঠিক ভাবে ওঠেনি। তবে এগুলি পড়তে বা তাদের অর্থ বুঝতে কোনো সমস্যা হবে বলে লেখক মনে করে না। একই কারণে দুএকটা শব্দ হার্ডব্যাক এডিশন থেকে একটু আলাদা করতে হয়েছে।
Contents
১ নিঃসঙ্গ আনিসা
২ লাল ইটের সেই বাড়ি
৩ দ্বিতীয় সুযোগ
৪ সায়মা ও আনিসা
৫ উবায়েদ
৬ মালেকের মুরগির খামার
৭ প্রিয়ার গান শেখা
৮ এলোপাতাড়িত্ব
৯ ঢাকা যাত্রা
১০ বিচারপতির বিচার
১১ স্বামীর ঘরে প্রিয়া
১২ বিজড়িত মালেক
১৩ প্রিয়ার রেডিও প্রোগ্রাম
১৪ কোন দিকে বাইবে তরী, মালেক
১৫ প্রিয়ার মর্মব্যথা
১৬ সায়মার চোখ আর রবির নাটক
১৭ মালেক ও আনিসা ঢাকায়
১৮ ললির জন্ম
১৯ চটের পর্দার আড়ালে
২০ মালেকের নিজের বাড়ি
২১ বিলেত থেকে ফিরল বারেক
২২ দেশে সাধারণ নির্বাচন ও জরুরি অবস্থা
২৩ রবির দেশে ফিরে আসা
২৪ ২৫শে মার্চ ১৯৭১-এ বারেক
২৫ গ্রামের পথে পাঁচটি টমটম
২৬ কলকাতা থেকে বাংলাদেশে
২৭ মালেকের বিস্তৃতি
২৮ স্বাধীনতা
লেখক পরিচিতি
পুরনো রাস্তা নতুন পারাপার
১ নিঃসঙ্গ আনিসা
লম্বা পুকুরটি বিস্তৃত হয়ে একেবারে পুবমুখী বাড়িটির সম্মুখ পর্যন্ত গিয়ে পৌঁছেছে। ওই বাড়ির ব্যালকনি থেকে পুকুরের চারপাশের প্রায় সব রাস্তা পরিষ্কার দেখা যায়। অথচ আনিসা যখন সেখানে বসে রাস্তাগুলোর প্রতি চেয়ে থাকে তখন তাকে কেউ খুব একটা দেখতে পায় না। দুই বছর আগে বিধবা হয়েছে আনিসা। তার বাচ্চাদের বড় তিনজন স্কুলে গেলে সে প্রায়ই এখানে বসে পাড়ার কর্মকান্ড লক্ষ করে ও দৃশ্যগুলো উপভোগ করে। কখনো কখনো সে নিজেকে ডিটেক্টিভ বলে মনে করে হেসে ওঠে। কোন পড়শি কোন সময়ে কার বাড়ি যায়, কে কখন বাজার থেকে ফেরে কুলির মাথায় বোঝা চাপিয়ে পায়ে দলে বা রিকশা করে। অথবা কুলির ঝাঁকাটি রিকশার পাদানিতে রেখে কুলিকে পাদানির একপাশে বসিয়ে, তা সে খেয়াল করে। সে অতীতে এও লক্ষ করেছে যে তার প্রতিবেশী শামস রহমান কুলিকে পাদানিতে নয়, সব সময় একেবারে তার নিজের পাশে বসিয়ে বাজার থেকে ফিরত। সে ভাবত শামস একজন উদারমনা ব্যক্তি। তবে আজকাল আর শামস নিজে খুব একটা বাজার করে না। তার মেজো ছেলে মালেক রহমান করে।
অন্যান্য দিনের মতো আজও সে ব্যালকনির রোদে গিয়ে বসে। তার লম্বা ঘন চুলগুলো পিঠের ওপর মেলে দিয়ে। পুকুরটির ওপর দিয়ে বয়ে আসা হালকা বাতাস সে উপভোগ করছে। আজ আনিসা ফেরিওয়ালাদের তৎপরতা দেখছিল। প্রথমে তার দৃষ্টি হামিদ মিয়ার বাড়ির প্রতি আকৃষ্ট হলো। সে পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছে সেখানে সাইকেলের মতো একটি মেশিনের সিটে বসে প্যাডেল ঘুরিয়ে এক ফেরিওয়ালা তাদের বাড়ির যতসব ছুরি-কাঁচি ধার দিচ্ছে। অন্য একটি বাড়ির সামনে একজন ঝাঁকা মাথায় চিৎকার করে বলছে, মাছ নিবেন, মাছ। টাটকা মাছ। এবার আনিসার দৃষ্টি দুটি গরুগাড়ির প্রতি আকৃষ্ট হলো। বস্তা বোঝাই গাড়ি দুটি পুকুরের উত্তর পাশে অবস্থিত শামসের বাড়ির সামনে এসে থামল। কিছুক্ষণ পর মালেক বাড়ির ভেতর থেকে বেরিয়ে এল। পরনে একটি সাদা স্যান্ডোগেঞ্জি ও লুঙ্গি। তার যোদ্ধার মতো প্রশস্ত বক্ষ ও ঘাড় দেখিয়ে। আনিসার মনে পড়ল, মালেক অল্পক্ষণ আগে সাইকেলে করে বাড়ি ফিরেছে। সাইকেলের হ্যান্ডেলের সঙ্গে একটি চটের স্ফিত ব্যাগ ঝুলানো ছিল। দেখে মনে হলো ব্যাগভর্তি বাজার। মালেক সাধারণত এই সময় বাজার করে ফিরে। আজ যখন ফিরল তখন তার পরনে শার্ট ও প্যান্ট ছিল। আহা, বেচারা! সাইকেল চালিয়ে হয়তো ঘেমে গেছে। মালেক বেরিয়ে এসে সরাসরি গাড়ির চালকদের কিছু বলল। আর গাড়ির চালক ও তাদের সহকারীরা হয়ে উঠল তৎপর। আনিসা এই কর্মতৎপরতা থেকে চোখ ফিরিয়ে নিতে পারল না। সাহায্যকারী ছেলেরা গাড়ি থেকে একটি করে বস্তা পিঠে নিয়ে মালেকের পিছু পিছু বাড়ির ভেতর প্রবেশ করল। বস্তাগুলো পিঠে তুলে নেওয়ার সময় গাড়োয়ানরা ছেলেদের সাহায্য করল। এগুলো নিশ্চয়ই ভারী। হয়তো সেজন্য ছেলেরা সামনের দিকে ঝুঁকে হাঁটছিল। কাছে থাকলে হয়তো এদের থপ থপ করে পা ফেলার শব্দ আনিসা শুনতে পেত। সে বুঝতে পারছে না বস্তাগুলোতে কী থাকতে পারে। সাহায্যকারীরা যখন পরিশ্রান্ত হয়ে ফিরে এসে গাড়িতে উঠে বসল মালেক তখন গাড়ির চালকদের কী যেন দিল। মনে হলো তাদের পাওনা। আনিসা লক্ষ করেছিল যে অধিকাংশ বস্তার বাইরে অনেক জায়গায় থ্যাবড়া থ্যাবড়া কালো দাগ। সে কৌতূহলী হয়ে উঠল। ভাবল যখন মালেক তার বাড়ির সামনে দিয়ে যাবে তখন তাকে জিজ্ঞেস করবে বস্তাগুলোর মধ্যে কী ছিল। মালেক তো প্রায়ই তার বাড়ির সামনে দিয়ে বিকেলে মোড়ের দিকে যায়। কিন্তু তার এত উৎসাহ দেখানো ঠিক হবে কি না বুঝতে পারছে না।
এগুলো দেখতে দেখতে আনিসার প্রায় পুরো সকালটিই চলে গেল। তবুও ব্যালকনি ছেড়ে উঠতে তার মন চাইল না। একসময়ে সে ভাবতে থাকে যে তার একার পক্ষে সংসার চালানো দিন দিন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। ছেলেমেয়েরা বড় হচ্ছে, ওদের বিভিন্ন ধরনের চাহিদা বাড়ছে। ছোট দুটি মেয়ে এখনো স্কুল শুরু করে নি। ওরা অন্য ঘরে আয়ার সঙ্গে খেলছে। অর্থের আধিক্য তার না থাকলেও খুব টানাটানি তার কোনোদিনই ছিল না। তবে বিধবা হওয়ার পর থেকে তাকে বিলাসসামগ্রীর খাতে ব্যয় সীমিত করতে হয়েছে। স্বামী আজাদ খন্দকারের মৃত্যুর পর মৃতদেহের সৎকারের খরচ বহন ও তার ধার-দেনা পরিশোধ করে বাকি যে নগদ টাকাপয়সা ছিল সেগুলো তার চার ভাই ভাগ করে নিয়েছে। আনিসা ও পাঁচ ছেলেমেয়ের ভাগে পড়ল এ দোতলা বাড়ি, আর লক্ষ্মীপুরের জমিগুলোর অংশবিশেষ। বিয়ের পর পরই অবশ্য আজাদ তাকে পুরনো প্রথা অনুসারে পানসুপারির খরচের জন্য বেশ কয়েক হাজার টাকা দিয়েছিল। ওই টাকা সে আলাদা করে রেখে দিয়েছিল দুঃসময়ের জন্য। সে টাকায় সে হাত কখনো দেয় নি। সে কথা আজও সে বলে নি কাউকে।
তাদের বাড়ির নিচতলার ভাড়া থেকে দৈনিক বাজারহাট ও বাচ্চাদের পড়াশোনার খরচ চলে। তবে বাচ্চাদের অসুখবিসুখ হলে একটু সমস্যা হতো। সেজো ছেলে সাজিব ছোটবেলায় পোলিও মায়ালাইটিস রোগে আক্রান্ত হয়। ফলে সে খুঁড়িয়ে হাঁটে। তার যাতায়াতের জন্য মাঝে মাঝে রিকশাভাড়া দিতে হয়। সে জন্য কিছু টাকা তাকে সব সময় মজুত রাখতে হতো। আর ঈদের কাপড়চোপড় তো একটা আলাদা ব্যয়বহুল খাত। এ ছাড়া তার নিজস্ব একটা খরচ আছে না ? আনিসার ছোটবেলা থেকেই প্রসাধনীর প্রতি একটু দুর্বলতা ছিল। লক্ষ্মীপুরের জমির ফসল বিক্রির টাকা আসার জন্য স্বচ্ছলতার সঙ্গে তার চলে যায়। তা না হলে জীবনের ন্যূনতম বিলাসিতা থেকে বঞ্চিত হতে হতো অথবা জমা টাকায় হাত দিতে হতো।
এ ছাড়া বাড়িতে পুরুষমানুষের অবর্তমানে বাচ্চাদের মানসিক সব প্রয়োজনগুলো সে একা মেটাতে সক্ষম হচ্ছে বলে মনে করে না। বাচ্চারা তাদের পিতার অনুপস্থিতি অনুভব করে। ওরা যখন নিজেদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি, মারামারি করে আর আনিসা যখন সে হট্টগোল একেবারেই সহ্য করতে পারে না, অন্তত তখন সে তার স্বামীর অনুপস্থিতি অনুভব করে।
স্বামীর মৃত্যুর পর অনেক অনেক দিন চলে গেলেও সে সারা দিন কোনো সমবয়সী মানুষের সঙ্গ পায় না। কারও সঙ্গে কোনো কিছু নিয়ে একটু গভীরভাবে আলোচনা করবে সে সুযোগ হয় না। অবশ্য তার স্বামী বেঁচে থাকতে যে খুব একটা হতো তাও নয়। বাচ্চাদের সঙ্গে থাকা, ওদের সঙ্গে কথা বলা, এতে তার অফুরন্ত তৃপ্তি আসে। কিন্তু বড়দের সঙ্গের অভাবটি মাঝে মাঝে এত তীব্র আকার ধারণ করে যে তার দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। ওই নিঃসঙ্গ মুহূর্তগুলোতে সে মনে করে বোধহয় সারা জীবন এভাবে একাকী কাটানো সম্ভব নয়। তার জীবনে একজন সঙ্গীর প্রয়োজন। তার বয়স তো খুব একটা বেশি নয়। এই বয়সেও তো অনেকে মা হয়। তা ছাড়া নিরাপত্তার একটি প্রশ্ন আছে না ? একা একা এ-বাড়ি ও-বাড়ি যাওয়া সে পছন্দ করে না। যখন বাধ্য হয়ে বাইরে বেরোতে হয়, তখন রাস্তার লোকজন এমনভাবে তার দিকে তাকিয়ে থাকে যেন মনে হয় যে ওদের দৃষ্টি তাকে বিদ্ধ করছে। এতে তার খুব অস্বস্তি লাগে। সেজন্য আজকাল আর সে খুব একটা বের হয় না। যখন আর কোনো উপায় থাকে না, হয়তো লৌকিকতার চাপে এখানে ওখানে যেতে হয়, তখন সে কালো বোরকা পরে স্বস্তি পায়। কিন্তু এভাবে তো বাকি জীবন কাটানো সহজ নয়।
ভাবি, একজন মহিলা এসেছেন বেড়াতে। উনি আরেকদিন এসেছিলেন।
কাজের মেয়েটি এসে ঘোষণা করল। আনিসা যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচল। ভাবল, সে যেই হোক না কেন, অন্তত কিছুক্ষণ কথা বলা যাবে।
আসতে বল।
আনিসা দেখল যে তারই এক প্রতিবেশী মাসুমা এসেছে।
তারা দুজনে গল্প করল, পাড়ার দু-একজন মানুষ নিয়ে খুব হাসিঠাট্টা করল। চা খেল। পরে একসময় মাসুমা বলল, ভাই সাহেবের মৃত্যুর তো প্রায় দু’ বছর হয়ে গেল। আর কত দিন এভাবে একা একা থাকবে ? একটি গৃহকর্তার তো প্রয়োজন আছে। এ নিয়ে কিছু ভাবছ ?
তেমন কিছু না।
আমার ছোটভাই থাকে হড়গ্রামে। তার পাশের বাড়িতে থাকেন একজন উকিল, হাসান আলী। ওঁর স্ত্রী নাকি এক বছর আগে ইন্তেকাল করেছেন।
হায়! হায়! কীভাবে মারা গেলেন ভদ্রমহিলা ?
কলেরা হয়েছিল।
কলেরা হয়েছিল ? এই রোগ তো একটু সচেতন হলে এড়ানো যায়।
ওদের কপাল খারাপ। সে যাই হোক, মি. আলী আবার বিয়ে করতে চান। ভদ্রলোক দেখতে চমৎকার। কথাবার্তায় অমায়িক।
ভদ্রমহিলার কোনো বাচ্চাকাচ্চা হয়েছিল ?
হয়েছিল। তাদের চারজন বাচ্চা। তিন ছেলে আর এক মেয়ে। মেয়েটি সব চেয়ে বড়। বিয়ের বয়সী। ওরা বর খুঁজছে।
আপা, আমার নিজের তো পাঁচ ছেলেমেয়ে। তার ওপরে আরও চারজন। আপনি কি মনে করেন না সেটা আমার জন্য একটু বেশি হবে ? তো ভদ্রলোকের বয়স কত ?
এই পঞ্চাশ-পঞ্চান্ন হবে। তবে উনাকে দেখলে এত বয়স বোঝা যায় না। মনে হয় চল্লিশের কাছাকাছি।
বু